বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন

News Headline :
মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শ্যামনগরে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীর মোহনপুরে মদ পানে ৩ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ২ রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

রামগড়ে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন প্রশাসন নিরব

Reading Time: 2 minutes

আব্দুল্লাহ আল মামুন, খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার ৮নং ওয়ার্ড, ওয়াইফা পাড়া, লামকুছড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় কৃষি জমি কেটে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে।
জানা যায়, রামগড় পৌরসভার কাউন্সিলর মো. কাশেমের ছেলে ফারুক ওরফে চিকনা ফারুক ইজারাবিহীন এই ঘাট থেকে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব‍্যক্তিদের সহযোগিতায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকিতে পড়েছে ফসলি জমি। জমি থেকে বালু উত্তোলনের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী ফলজ ও বনজ বাগান মালিকরা এবং স্থানীয়দের ঘরবাড়ি। এছাড়া বড় বড় ট্রাক দিয়ে বালি পরিবহন করায় গ্রামীণ সড়কটির অনেক জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্থান একটি কৃষি জমি। জমির উপরিভাগে সামান্য মাটি থাকলেও নীচে সব বালির স্তুপ। কৃষি জমি সংলগ্ন খালে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। অতি মুনাফার লোভে জমি থেকে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বালি উত্তোলন করে ট্রাকযোগে বিক্রি করছেন। জানা যায়, তৈচালা ও সোনাইছড়ি খাল এবং পিলাক নদীর অন্তুপাড়া ও বৈদ্যপাড়া বালু উত্তোলনের এ চারটি ঘাট ইজারাভুক্ত। এর বাইরে আরও অর্ধশতাধিক অবৈধ ঘাট রয়েছে যেখান থেকে প্রতিনিয়ত বালু পাচার হচ্ছে। খাগড়াবিল ও নতুনপাড়া সড়কটি বালুভর্তি ট্রাকের দাপটে ক্ষতবিক্ষত। অনেকসময় খাগড়াবিল বাজারের সামনে আটকা পড়ে। রাস্তা এতোটাই খারাপ করা হয়েছে এলাকায় জনভোগান্তির আরেক নাম এখন বালুবাহিত ট্রাক। রামগড় ৪৩বিজিবি’র সদর দপ্তরের পাশে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয় থেকে আধা কি.মি. ভিতরে পাহাড়ের ঢালে, রুপাইছড়ি তাঁরাচান পাড়া, নোয়াপাড়া, নব্বই একর, লালছড়ি, লামকুপাড়া বাগানটিলা, দক্ষিণ লামকু পাড়া গেলে দেখা যায় বালু উত্তোলন করায় ধানি জমিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, কালভার্ট নষ্ট হচ্ছে ও রাস্তা-ঘাট ক্রমেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। অথচ বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ৪ ধারায় স্পষ্ট বলা আছে-উন্মুক্ত স্থান, ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন ১কিলোমিটারের মধ্যে বালু বা মাটি উত্তোলন বা বিপণনের উদ্দেশ্যে ড্রেজিং করা যাবে না। এলাকাবাসী ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বালুখেকোরা রাস্তা-ঘাট, ধানি জমি, কালভার্ট ধ্বংস করছে। ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। মফিজ মেম্বারের বাড়ির পাশে দুটি, লালছড়িতে ছয়টি, উত্তর লামকুপাড়ায় দুটি অবৈধ বালুমহাল রয়েছে। পাতাছড়া ইউনিয়নের যৌথখামার হয়ে বাজার চৌধুরী ঘাটে পাঁচ-সাতটি অবৈধ বালুমহাল আছে। এই জায়গাটা বেশ দুর্গম হওয়ায় প্রশাসনের খুব একটা নজরদারি নেই। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চললেও প্রশাসন থাকছে নীরব। ড্রেজার মেশিন ও বালু পরিবহনে ব্যবহৃত ড্রামট্রাক ও ট্রাক্টরের বিকট শব্দে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। যত্রতত্র বালু উত্তোলন জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। রাত-দিন সবসময় চলে এই অবৈধ বালু পাচারের উৎসব। ফলে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, সেতু-কালভার্ট নষ্ট হয়ে ক্রমান্বয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে ধুলোবালির স্তুপ আবাসিক এলাকার বায়ুদূষণসহ সার্বিক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেট বিভিন্ন বাঁধাকে উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন। কয়েকমাস যাবত দিনরাত আবাধে বালু তোলার কারণে ফসলি জমি পাহাড় ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। তারা আরও বলেন, প্রভাবশালী বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার মেলেনি।
প্রভাবশালী বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট নদী-ছড়া-খাল-বিল ও কৃষিজ জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ইজারা বহির্ভূত জায়গা থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছে। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বালুমহল মাটি ব‍্যবস্থাপনা আইন ২০১০এর ধারাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করায় পাহাড়ের পাশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে ফলে বর্ষাকালে ওই স্থানে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় এ অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের সত্যিকারের সক্রিয়তা দেখতে চায় এলাকাবাসী। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করতে মোবাইলে কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com